সাবেক নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদকে চট্টগ্রাম নগরের খুলশী থানা এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার বিকাল পৌনে ৬টার দিকে কোতোয়ালী থানা পুলিশের একটি টিম তুলাতলী এলাকা থেকে তাকে আটক করে।
কোতোয়ালী থানার ওসি ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে রাজধানীতে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ভোট কেলেঙ্কারীর অভিযোগ রয়েছে। যার প্রেক্ষিতে তাকে আটক করা হয়। ঢাকা থেকে আইনশৃঙ্থলাবাহিনীর বিশেষ একটি টিম চট্টগ্রাম খেকে তাকে নিয়ে যেতে আসছেন। রাতেই তাদের হাতে সোপর্দ করা হবে।
সাবেক সচিব হেলাল উদ্দিনের জন্ম ১৯৬৩ সালের ২৩ মে কক্সবাজার জেলার ঈদগা উপজেলায়। তিনি ১৯৮৮ সালে ফেব্রম্নয়ারিতে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করেন। তিনি সহকারী কমিশনার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, মেয়রের একান্ত সচিব, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক, ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি স্থানীয় সরকার, পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আজ্ঞাবহ এই কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনের সচিব থাকাকালে রাতের ভোটের আয়োজন করে ফ্যাসিস্ট সরকারকে মসনদে আসীন করার অন্যতম ভূমিকা পালন করেন। তিনি নির্বাচন কমিশনের সচিবের দায়িত্ব পালনকালে কোর্স কনসালটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করার জন্য নিয়মবহির্ভূতভাবে পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন- যা ছিল সম্পূর্ণ বেআইনি। এছাড়া তিনি তৎকালীন উপজেলা নির্বাচনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে বক্তৃতা বা দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়েছিলেন।
এদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন বাতিল, হাজার কোটি টাকার ইভিএম ক্রয় ও মেরামতের নামে লুটপাট করে শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব থাকাকালীন অবৈধভাবে অনেক নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বেআইনি পন্থায় বহিষ্কার ও পদ স্থগিত করার আদেশ দেন তিনি।
নিজ এলাকায় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণের অভিপ্রায়ে কক্সবাজার জেলার একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ ও কতিপয় পেশিশক্তিদারীদের পোষণ করতেন তিনি। কক্সবাজার পৌরসভার পানি শোধনাগার নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণ, দোহাজারী হতে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণসহ কক্সবাজার জেলার উন্নয়নের নামে নানা প্রকল্প গ্রহণ করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ লোকজন ও সিন্ডিকেট মিলে হাতিয়ে নেয় হাজার কোটি টাকা। এ ঘটনা উদ্ঘাটন করার কারণে চাকরিচ্যুত হন দুদকের কর্মকর্তা উপসহকারী পরিচালক শরীফুল ইসলাম। – চট্টগ্রাম খবর