তানোর থেকে; জাকির হোসেন- টুটুলঃ তানোরে হিমাগারগুলোতে প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৪ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৮ টাকা করায় কৃষকদের মধ্যে অসন্তোষ, ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
রাজশাহী জেলার (বরেন্দ্র অঞ্চল) তানোর উপজেলার হিমাগার গুলোতে আলু হিমায়িত রাখার ভাড়া দ্বিগুন করার প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
আজ ১২- জানুয়ারী (রবিবার) গোল্লাপাড়া বাজার ফুটবল মাঠে উপজেলা আলু চাষী কল্যান সমিতির আয়োজনে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
জানা গেছে তানোর পৌর বিএনপির সভাপতি ও আদর্শ আলু চাষী একরাম আলী মোল্লার সভাপতিত্বে ও উপজেলা আলু চাষী কল্যান সমিতির সভাপতি, আলহাজ নুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী জেলা জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি’র) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র, মিজানুর রহমান মিজান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন; বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আদর্শ আলু চাষী আলহাজ সালাউদ্দিন আলী, ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, সমিতির কোষাধ্যক্ষ রাশিদুল ইসলাম কারি, তানোর পৌর সভার সাবেক কাউন্সিলর ও বিশিষ্ট আলিচাষী আবু সাইদ বাবু, তানোর পৌর সভার সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মান্নান, তানোর পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জুল হোসেন তোফা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আলু চাষি লিমন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আলু চাষি আহসান হাবিব সহ, বিভিন্ন এলাকার শত শত আলুচাষী ও ব্যবসায়ীগণ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় কৃষক প্রতিনিধি ও তানোর পৌর বিএনপির সভাপতি, আদর্শ আলু চাষী, একরাম আলী মোল্লা- ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন; আলু রোপনের শুরুতেই বীজ সংকটের কারনে দ্বিগুণ দামে বীজ ক্রয় করতে হয়েছে।
এছাড়া সার-কিটনাশক বেশী মূল্যে ক্রয় করতে হয়েছে। এখনও আলু রোপন চলমান রয়েছে।
দ্বিগুণ মূল্যে আলু বীজ ক্রয়, সার কীটনাশকের মূল্যও অতিরিক্ত, এদিকে হিমাগার কর্তৃপক্ষ আলু হিমায়িত করার জন্য ভাড়া করেছে দ্বিগুণ, ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এর আগে গত ২৬-ডিসেম্বর প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর নিকট রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দাখিল করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন; চলতি বছর আলুর চাষ বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য হিমাগার কর্তৃপক্ষ সিনডিকেট করে, বস্তা প্রতি ভাড়া নির্ধারণ না করে কেজি প্রতি ভাড়া নির্ধারণ করেছেন। গত বছর বস্তা প্রতি হিসাবে ভাড়া পড়েছে প্রতি কেজি সাড়ে ৩ টাকা থেকে ৪ টাকা। এবছর হঠাৎ করেই প্রতি কেজি আলুর ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ টাকা। গত বছরের প্রতি বস্তার রেট ২শত, ৫৫ টাকা ছিলো। এবছর বস্তার হিসেবে বুকিং স্লিপ কাটার সময় ২শত ৮৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। হঠাৎ করে হিমাগার কর্তৃপক্ষ কৃষকদের মাঝে সকল বুকিং বাতিলের ঘোষনা করে নতুন করে প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা নির্ধারনের ঘোষণা দিয়ে কৃষকদের বুকিং স্লিপ কাটার ঘোষণা দেন।
এখন আলু চাষিরা বলছেন, ৮ টাকা কেজি হিসেবে হিমাগারে আলুর ভাড়া দিতে হলে আমাদের পথে বসতে হবে। গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি, এটি কৃষকদের প্রতি অন্যায় ও অযৌক্তিক। দ্বীগুণ ভাড়া বৃদ্ধি মেনে নেয়া সম্ভব নয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে কৃষক প্রতিনিধিরা বলেন: যদি হিমাগার কর্তৃপক্ষ কৃষকদের সাথে বসে আলোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক পর্যায়ে ভাড়া নির্ধারণ না করেন, তাহলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিটি হিমাগারে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হবে।
এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তানোর আমান কোল্ড স্টোরের ম্যানেজার জালাল উদ্দীন বলেন, গত বছর প্রতি ৫০ কেজির বস্তার ভাড়া ছিলো ৩শ’ টাকা এবং লেবার খবচ ১৫ টাকা। কিন্তু আলু চাষী ও ব্যবসায়িরা ৫০ কেজি আলুর পরিবর্তে ৭০ কেজি থেকে ৮০ কেজি করে আলু রাখছে। যা সরকারী নিয়ম বহির্ভূত। এবছর সরকার কর্তৃক বাংলাদেশ কোল্ড স্টোর এ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আলুর ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে (৫০কেজির বস্তা) প্রতি কেজি ৮ টাকা। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই বলে জানান তিনি।