নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়াঃ কক্সবাজারের পেকুয়ায় রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও পেকুয়া উপজেলা আওয়ামীগের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুলের বিরুদ্ধে ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান এলাকাবাসী।
দূর্নীতি ও প্রকল্পের টাকা আত্মসাদের ঘটনায় চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বারাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বর্তমান রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল আবছার, ও ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য মো: ছলিম উল্লাহ।
জেলা প্রশাসনের কাছে দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পেকুয়া উপজেলাধীন রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের পেকুয়া উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল। চেয়ারম্যানের পদ ও আওয়ামীগের দলীয় পদের ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে গায়ের জোরে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসূচীর কাবিকা, টি.আর, ফেরীঘাট, ১% ও উন্নয়ন সহায়তা তহবিল, টিসিবি কার্ড (উপকার ভোগী) এবং কর্মসূচীর নল ওয়াজের সরকারি বরাদ্দকৃত টাকা সহ বিভিন্ন প্রকল্প গোপন রেখে নামমাত্র প্রকল্প দেখিয়ে পরিষদের সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত সকল কাজের টাকা দুনীর্তির মাধ্যমে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে আত্মসাৎ করে।
২০২২ইং সন হইতে ২০২৪ইং সন পর্যন্ত তিনি বর্ণিত বিষয়ে উল্লেখিত সরকারী বরাদ্দ সহ বিভিন্ন বরাদ্দ কাজে একক ভাবে নিয়ম বহির্ভূত কাজ করে ০৩ বৎসর যাবত ৫,৬, ৭নং ওয়ার্ডে কোন ধরনের বরাদ্দ না দিয়ে এবং বিভিন্ন প্রকল্প গোপন রেখে নামমাত্র প্রকল্প দেখিয়ে দূর্নীতি করেছে। সরকারি বরাদ্দকৃত কাজের টাকা আত্মসাৎ করে।
তাকে বিচারবিভাগীয় তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানান অভিযোগকারীরা।
এছাড়া ২০১৫ সালের অক্টোবর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল বিধিবহির্ভূতভাবে এলজিএসপির বরাদ্দের বিপরীতে ছয়টি প্রকল্পে কাজ না করে মহিলা সদস্য ও ইউপি সচিবকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়া ভিজিডি প্রদানে একতরফাভাবে উপকারভোগী নির্বাচন ও গ্রাম আদালতের জন্য প্রদান করা এক লাখ টাকা যথাযথভাবে ব্যয় না করে অনিয়ম করেছেন। এসব অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ ধারা ৩৪ (১) মোতাবেক নজরুল ইসলামকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
বর্তমান সময়ে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ভিডব্লিউবি(পূর্বের ভিজিডি) ত্রাণের কার্ড বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তদন্ত কমিটি তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত প্রতিবেদন দিয়েছেন।
গত ০৫ আগস্ট ছাত্রজনতার অদভুত্থানের পর শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ঘাঁ ড়াকা দিয়েছেন তিনি।যার কারণে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে । ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবা প্রার্থীরা। তিনি চট্রগ্রামে নিহত শহীদ ওয়াসিম আকরাম হত্যার এজাহার নামীয় আসামী।এসব কিছুর পরও তিনি তাঁর পদে বাহাল আছেন।
ইউপি সদস্য নুরুল আবছার বলেন, আমাদের রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল সরকারি প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন। কয়েকটি প্রকল্প ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। আরো অনেক প্রকল্পে দুর্নীতি করে সরকারি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আমরা এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবর লিখিত দিয়েছি। আমরা আশা করব জেলা প্রশাসক মহোদয় তার বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।চেয়ারম্যন দুর্নীতিতে খুব পারদর্শী লোক ২০১৫ সালে দুর্নীতির কারণে চেয়ারম্যান পদ থেকে বহিষ্কার হয়েছিল।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল পালাতক থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।