নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজারের পেকুয়ায় ফসল লুট ঠেকাতে রাতেই মাঠে গেল পুলিশ। ৯৩ শতক ফসলি জমির নিয়ন্ত্রণ নিতে দুপক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। রবিবার সকাল ১০ টার দিকে ও শনিবার রাত ১২টার দিকে দু'দফা ফসল লুট বন্ধ করেছে পুলিশ। তবে জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে উপজেলার টইটং ইউনিয়নের হাজির বাজারে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়েছে।
স্থানীয়সুত্রে জানাগেছে, ৯৩ শতক জায়গা নিয়ে হাজির বাজারে মৃত হাকিম আলীর পুত্র আব্দু ছবুর গং ও মৃত নুর আহমদের পুত্র মোহাম্মদ আলী গংদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এজমি আব্দু ছবুর, আব্দুল কুদ্দুস গংদের রেকর্ডীয় ও ভোগ দখলীয় সম্পত্তি। আব্দু ছবুরের পিতা মৃত হাকিম আলী ও মাতা গুল বাহারের নামে রেকর্ডীয় সম্পত্তি দীর্ঘ শত বছর ধরে তাঁরা ভোগ করছিলেন। সম্প্রতি এ জায়গা নিয়ে মোহাম্মদ আলী মদন গংদের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। চলতি বোরো মৌসুমে এ জমি স্থানীয় প্যানেল চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে কায়সার নামের চাষা এ জমি চাষাবাদ করে। মুলত কায়সার ছিলেন ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে আব্দু ছবুর গংদের চাষা হিসেবে জমি চাষাবাদ করছিলেন। বোরো ফসল কাটার মৌসুম শুরু হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, মোহাম্মদ আলী মদন তাঁর অনুগত লোকজন নিয়ে জমি থেকে পাকা ফসল লুট করার চেষ্টায় মেতেছে। এর অংশ হিসেবে শনিবার গভীর রাত ও রবিবার সকালে দু'দফা আব্দু ছবুর গংদের জমিতে হানা দেয়। খবর পেয়ে শনিবার রাতে পেকুয়া থানার এএসআই মোর্শেদুর রহমান ও রবিবার সকালে এসআই মাশুক ওই স্থানে গিয়ে ফসল লুট বন্ধ করে।
এ ব্যাপারে আব্দু ছবুর জানান, আমরা খুবই অসহায়। মোহাম্মদ আলী মদন আমাদের কাছ থেকে স্বত্ব পাবেনা। সে যা পাবে তাঁর চেয়ে অধিক বিক্রি করে দিয়েছে। তাঁর অনুকূলে থাকা জমি রেকর্ড আসেনি। তবুও তাঁর ভোগ দখলীয় অংশে আমরা কেউ এ নিয়ে আপত্তি করছিনা। আমরা সেনাবাহিনীর কাছে গিয়েছিলাম। এর আগে সে এমআর মামলা করেছে। সরেজমিন তদন্ত ও কাগজপত্রে জমি নেই মর্মে এসিল্যান্ড বাদীর বিপক্ষে প্রতিবেদন দিয়েছে। মামলা খারিজ হয়ে গেছে। কায়সার আমাদের চাষা। কিন্তু এখন মদনের পক্ষাবলম্বন করছে।
আব্দুল কুদ্দুস এর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম বলেন, আমার দাদা শ্বশুরের সময় থেকে এ সম্পত্তি ভোগ করে আসছিল। আমার স্বামী মানসিক ভারসাম্যহীন। আমার ছেলে আবুল হোসেন ক্যান্সারে মারা গেছে। সে ছিল অনুর্ধ ১৭ দলের কক্সবাজার থেকে বাছাইকৃত বিকেএসপির মেধাবী ক্রিকেটার। কিন্তু এ অবস্থায় আমাদের উপর চরম জুলুম করছে।
পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) দুর্জয় বিশ্বাস জানান, এ জমি নিয়ে কোর্টে একটি সিআর পিটিশন আছে। পুলিশ এ মামলার তদন্ত করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটাতে উভয় পক্ষকে বলা হয়েছে।