• বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন

প্রধান শিক্ষককে বের করে দিয়ে তার চেয়ারেই বসলেন ছাত্র, ছবি ভাইরাল

সাম্প্রতিক খবর ডেস্কঃ / ১৬৯ Time View
Update : শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করার পর প্রশাসনের সহায়তায় তিনি বিদ্যালয় ত্যাগ করার পর তাঁরই চেয়ারে বসে যান একই বিদ্যালয়ের এক ছাত্র। প্রথমে এ ছবি দেখে অনেকেই ছবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। পরে পরিচয় মিলে ওই ছাত্রের।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে সেই ছবি। এ ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীদের এমন দৃষ্টতা নিয়ে নেটিজেনরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। চেয়ারে বসা ইকরামুল হাসান ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। সে স্থানীয় কুরুইন গ্রামের আবুল হাসমের পুত্র। এ নিয়ে বিদ্যালয় এলাকার লোকজন, সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও ক্ষুব্ধ। এদিকে শুক্রবার ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিগার সুলতানা।

ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, টেবিলের উপর থাকা প্রধান শিক্ষক কাজী আলমগীর হোসেনের টেবিলে রাখা নেম প্লেট সামনে রেখে স্কুল ড্রেস ছাড়া সাদা পোষাকে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসে আছেন ছাত্র ইকরামুল। এ সময় ওই কক্ষে আর কাউকে দেখা যায়নি। এ ছবি প্রথমে নিজের ফেসবুকেই প্রথম আপলোড করেন ওই ছাত্র লিখেন ‘ আমাদের সু-সন্মানিত আলমগীর স্যার কোথায় ।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ছবি ভাইরাল হয়ে পড়ে। সাদ্দাম হোসেন নামের এক ব্যক্তি এ ছবি পোস্ট করার পর শুক্রবার বিকাল সোয়া ৪টা পর্যন্ত ১৬৬ জন নেতিবাচক মন্তব্য করেন। কমেন্টে মঈন উদ্দিন নামের একজন লিখেছেন ‘ শিক্ষা ব্যবস্থা শেষ করে গেছে হাসিনা সরকার, তার ফল এই গুলা।’ মুন্সী আজিম লিখেছেন ‘ পিতা মাতার পরেই শিক্ষকের স্থান, শিক্ষককের সাথে বেয়াদবি মানে দুনিয়া ও আখেরাত দুইটাই বরবাদ।’ আক্তার নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন ‘ ফাইজলামির একটা লিমিট থাকা উচিত।’ পারভেজ লিখেছেন ‘স্বাধীন দেশের স্বাধীন ছাত্র।’ শাহ আলম ভূইয়া বাবু নামের একজন বলেছেন ‘ জীবনে আর এটা দেখার বাকি ছিল।’

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার সকাল থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল প্রধান শিক্ষক আওয়ামী লীগ করেন ও বিদ্যালয়ের অর্থে তিনি বিপূল পরিমান সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। তাই তাঁকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে হবে। খবর পেয়ে প্রথমে দেবিদ্বার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং পরে দুপুরের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়টির সভাপতি নিগার সুলতানা সেনাবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের সিদ্ধান্তে অনঢ় থাকে। পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সেনাবাহিনীর সহায়তায় প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ না করেই বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। এ বিষয়ে ওই ছাত্র বলেন, ‘সবায় অফিস কক্ষ ত্যাগ করার পর আবেগে চেয়ারে বসে ছবি তুলি, এটা আমার ঠিক হয়নি, সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমার এফবি থেকেও তা বাদ দিয়েছি।’

শুক্রবার বিকালে প্রধান শিক্ষক বলেন কাজী আলমগীর হোসেন বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের বলেছি আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত নই, কোথায় এ দলের সদ্য পদও নাই। দেবিদ্বারে নাকি আমার দুটি বাড়ি আছে, তাও তাদের প্রমাণ দিতে বলেছি, ওরা প্রমাণ দিতে পারেনি। ওই প্রধান শিক্ষকের ভাষ্য ‘ওরা হয়তো কারও ইন্ধনে ভুল বুঝে আন্দোলনে নেমেছে। অভিযোগ তদন্তের আগেই পদত্যাগে বাধ্য করা দেশে এখন যেন একটি রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নিগার সুলতানা বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে আমরা বিধিমোতাবেক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

কিন্তু প্রধান শিক্ষক অফিস থেকে বের হওয়ার পর তাঁরই ছাত্র চেয়ারে বসে ফেসবুকে ছবি পোস্ট দেয়ার যে ক্ষমাহীন দৃষ্টতা দেখিয়েছে এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেব। এমন আচরণ মেনে নেয়া যায় না। কোন বিবেকবান ও সুস্থ ছাত্র এটা করতে পারে না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
bdit.com.bd