কচুয়া প্রতিনিধিঃ মন্দিরের গাছের আম পাড়তে বাঁধা কেনো দিলো সেই জের ধরে বাঁধা প্রদান কারী রতন চন্দ্র দেবনাথ(৬৫) কে ঘরে ঢুকে পিটিয়ে আহত করে ফেলে রেখে গেছে স্থানীয় মোঃ শাকিলসহ বখাটেরা। ঘটনাটি জানা মাত্রই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।
১ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে চাঁদপুরের কচুয়ার ৯ নং কড়ইয়া ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে। আহত রতন চন্দ্র দেবনাথ ওই এলাকায় অবস্থিত শ্রী শ্রী সার্বজনীন গোপাল জিউ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক।
স্থানীয়রা জানান, এলাকার কিছু বখাটে প্রকৃতির যুবক ওই গোপাল জিউ মন্দির কমপ্লেক্সের ভেতরে ঢুকে মন্দিরের আম গাছ থেকে আম পাড়ছিলো। যা চলার পথে দেখে ফেলে রতন তাদেরকে আম পাড়তে নিষেধ করে এবং মন্দিরের ভেতর হতে চলে যেতে বলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বখাটেরা তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে রতনও বাড়িতে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পরই মন্দিরের পাশেই রতন দেবনাথের বাড়ীর ঘরে ঢুকে বখাটে যুবক মোঃ শাকিলের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের সংঘবদ্ধ দল রতন দেবনাথকে ব্যাপক মারধর করে আহত করে ফেলে রেখে যায়। এতে প্রতিহত করতে এসে ওই বাড়ীর অন্তর দেবনাথ (৩০) এবং হরিলাল দেবনাথ (৭০) ও আহত হন। আহতদের কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শ্রী শ্রী সার্বজনীন গোপাল জিউ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক রতন চন্দ্র দেবনাথ কান্নারত অবস্থায় বলেন, আমি কথা বলার অবস্থায় নেই। জীবনে আমি কারো ক্ষতি করিনি। এদের সাথে আমার ব্যাক্তিগত বা পারিবারিক কোন শত্রুতাও নেই। এরপরও এই বখাটে যুবকরা আমার সাথে যা করলো তার বিচার চাই।
এ ঘটনায় শ্রী শ্রী সার্বজনীন গোপাল জিউ মন্দির কমিটির সভাপতি অরুণ আচার্য জানান, একজনের ঘরে ঢুকে এরূপ হামলা মেনে নেয়ার মতো না। দেশে কি আইন কানুন নাই নাকি? আমরা এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ঘটনাটি অবগত করে যাচ্ছি। দ্রুত যদি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা না হয় তাহলে আইনিভাবে মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরো জানান, একশত এগারো শতাংশ জমির উপর এই মন্দির কমপ্লেক্সটি অবস্থিত। এখানে গোপাল জিউ, রক্ষা কালি ও দূর্গা মন্দির রয়েছে।
বর্তমানে সরকারি এবং এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মন্দিরে দৃশ্যমান উন্নয়ন চলমান। গত কয়েকমাস পূর্বে মন্দিরের দান বাক্স ভেঙে অর্থ লোপাট করেছে দুর্বৃত্তরা। হয়তো এরাই সে ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা যুব ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব বিনয় সরকার বলেন, এই মন্দির কমপ্লেক্সের ভিতরে প্রায় পনেরো লক্ষ টাকা ব্যয়ে দুটি ঘাটলা ও পুকুর খনন করা হয়। প্রায় সময়ই এলাকার একদল বখাটে যুবক মন্দিরের ঘাটলায় বসে নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করার চেষ্টা করে। এছাড়াও কমপ্লেক্সে অবস্থিত বিভিন্ন ফলজ গাছের ফল-ফলাদি বিভিন্ন সময় লুটপাট করে নিয়ে যায়। যা আমরা পূর্বেও অবগত ছিলাম। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে কোন পদক্ষেপ নেইনি। এখন ঘরে ঢুকে মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদককে প্রকাশ্য দিবালোকে যেভাবে মারধর করে ফেলে রেখে গেলো। এটা মেনে নেয়ার মতো না। আমরা প্রশাসনের কাছে এই বখাটের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিতের দাবী জানাচ্ছি।
এদিকে ঘটনার পর পরই বিষয়টি এলাকায় সমালোচিত হওয়ায় গা ঢাকা দেয়ায় শাকিলসহ তার গংদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনা অবগত আছেন জানিয়ে চাঁদপুরের কচুয়া থানার ওসি আজিজুল হক বলেন, আমি আম পাড়াকে কেন্দ্র করে একজনের ঘরে ঢুকে বখাটের মারামারির ঘটনাটি শুনেছি এবং একজন অফিসারকে দ্রুত পুরো ঘটনা জানতে পাঠিয়েছি। আমরা বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি এবং আইনী ব্যবস্থা চলমান।