জাতীয় ও স্থানীয় একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর পরই সেচ প্রকল্পের গাছ কেটে নেয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন মেঘনা ধনাগোদা পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেছে। ঘটনাস্থলের জায়গা বেদখল নিয়ে মারাত্বক শান্তি ভঙ্গের আশংকায় মতলব উত্তর থানায় দেয়া হয়েছে লিখিত অভিযোগ।
১ ডিসেম্বর রোববার অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেন মতলব উত্তর থানার ওসি মোঃ রবিউল হক।
অভিযোগের বাদী বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন মেঘনা ধনাগোদা পানি উন্নয়ন বিভাগে উপ-সহকারী প্রকৌশলী হৃষিকেশ ভৌমিক বলেন,ছেংগারচর পৌরসভার উত্তর কলাকান্দা গ্রামে সেচ খালের ডাইক সংলগ্ন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহনকৃত জায়গায় বিভিন্ন প্রজাতির কাঠ গাছ সৃজিত আছে। বিবাদী মো: বেনজীর আহম্মেদ (৫২), নূর মোহাম্মদ (নূরা) (৬৫), আবু বক্কর মিজি (৬৫), মো: উজ্জল ভূঁইয়া (৪৫), মো: জামান ভূঁইয়া (৩২), মো: হারুন ভূঁইয়া (৫৪), মো: সজীব (৩৮)সহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন পূর্ব থেকে ওই জায়গা জোর দখল করার পাঁয়তারা করছে।
গত ২৪ নভেম্বর দিনের আলোতে ওই জায়গা হতে সৃজিত বিভিন্ন প্রজাতির ১০/১২ টি কাঠ গাছ বিবাদীরা কেটে অনুমান ২ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমে সংবাদ দেখে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে কিছু গাছ কাটা অবস্থায় ঘটনাস্থলে পড়ে থাকতে দেখি এবং কিছু গাছ দেখি বিবাদীরা নিয়ে গেছে। গাছ কাটার বিষয়ে আমরা বিবাদীদেরকে জিঞ্জাসাবাদ করলে তারা গাছ কাটার বিষয়ে স্বীকার করেন এবং ওই জায়গায় বিবাদীরা বাউন্ডারী ওয়াল দিয়ে পারিবারিক কবরস্থান করবে বলে জানায়। বিবাদীরা যেকোন সময় পূনরায় ওই জায়গা জোরদখল করিতে পারে বিধায় আমি আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের মৌখিক নির্দেশে বিবাদীদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করতে থানায় অভিযোগ দায়ের করলাম। তদন্তে ঘটনার সত্যতা প্রকাশ পাইবে।তবে ওই জায়গা দখল বেদখল নিয়ে মারাত্বক শান্তি ভঙ্গের আশংকা রয়েছে।
স্থানীয় রুমা আক্তার, মো: ইসমাইল মোল্লা, সালাউদ্দিন ভূঁইয়া, নাছির উদ্দিন ভূঁইয়া, দুলাল ভূঁইয়া, শফিক বেপারী, মজিবুর রহমান মিজি, আলাউদ্দিন মিজিসহ অন্যরা বলেন, বেনজীর, নূর মোহাম্মদসহ ওই লোকগুলো সন্ত্রাসী প্রকৃতির এবং এরা প্রভাব বিস্তার করে জায়গা দখল ও লুটপাট করতেই এ কাজ করেছে। এদের বিরুদ্ধে যে বা যারা কথা বলবে তাদেরকেই এরা সংঙ্গবদ্ধভাবে হয়রানি করতে নানাভাবে উঠে পড়ে লাগে। এদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
স্থানীয় দেলোয়ার বলেন, কর্তৃপক্ষ থানায় এই গাছকাটাসহ নানা বিষয় তুলে ধরে অভিযোগ দেয়ায় আমার বিরুদ্ধে বিবাদীরা নানান অপপ্রচার শুরু করেছেন। আমি যেকোন ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সজাগ থাকতে সবাইকে সতর্ক করছি।
এদিকে গাছ কাটার অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেন মোঃ বেনজীর। তিনি বলেন, ওখানে একটি কবরস্থান রয়েছে। সেটি পরিষ্কার করতে গিয়ে কিছু গাছ কেটেছি। তবে এখানে যেই সমস্যা তৈরি হয়েছে তা সমাধানে সংশ্লিষ্টরা গণমান্যদের নিয়ে থানা পুলিশকে জানিয়েছে। আমরা পুলিশের দারস্ত হয়ে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের মতলব উত্তর থানার ওসি মোঃ রবিউল হক বলেন, এই অভিযোগটি পেয়েই তদন্তে নেমেছে পুলিশ। তদন্ত কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে।