• সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
তানোরে হিমাগারে ভাড়া দ্বীগুন বৃদ্ধির করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল রোটারি ক্লাব অফ আধুনিক চট্টগ্রামের শীতবস্ত্র বিতরণ বাগমারাতে জিয়াউর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত খাল পুণ্য খনন ও স্মরনীয় করতে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত পটিয়ায় কলিমউদ্দিন এর উদ্যাগে খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (র:) ওরশ সম্পন্ন পটিয়ায় হাজী আবদুস সাত্তার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এক হাজার গরীব অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের একটা উপজেলা বিবেচনা করে উন্নয়ন পরিকল্পনা করলে হবে না, সুজা উদ্দিন কর্ণফুলীতে বাবার সাথে ঘুরতে গিয়ে ট্রাকের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু  দ্য টাইমসের প্রতিবেদন: যুক্তরাজ্য সরকার মন্ত্রী হিসেবে টিউলিপের ‘বিকল্প বিবেচনা’ করছে কক্সবাজারে খুলনার সাবেক কাউন্সিলর হত্যার ঘটনায় মামলা বসুন্ধরার অনুষ্ঠানে গিয়ে সমালোচনার মুখে শফিক রেহমান

কালুরঘাট সেতুতে আলো, সংযোগ সড়কে কালো

চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ / ৭৩ Time View
Update : সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৪

লদীর্ঘ ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে সারানো হয়েছে কালুরঘাট সেতুর ‘বার্ধক্যরোগ’। পিচ ঢালা সেতুতে ট্রেনের সঙ্গে দিনেরাতে চলছে যানবাহনও। ঝলমল বাতিতে সাজানো সেতু-ওয়াকওয়ে সবই। তবে এতো সব আয়োজন শুধু সেতুর উপরেই। দু-প্রান্তে সেতুর সংযোগ সড়কে নামতেই ঘুটঘুটে অন্ধকারে ভুগতে হবে যানবাহন চালক-পথচারী সবাইকে।

কালুরঘাট সেতুর দুপ্রান্তে সংযোগ সড়কে নেই কোন বাতি। ফলে পথচারীদের মোবাইলের বাতি জ্বালিয়ে ওঠানামা করতে হয় সেতুতে। আর বাতি যানবাহন চলাচলের সময়ে পথচারীদের মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইটের আলো চোখে পড়লেই সামনে আর কিছু দেখেন না চালকরা। এতে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে যানচলাচল। এ যেন রোগশোক সারিয়ে তোলা কালুরঘাট সেতুর আরেক ‘ফোড়া’।

শুধু কি তাই! উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণীদের আড্ডা তো আছেই সড়কে শুয়ে-বসে থাকেন কেউ কেউ। কখনো যানবাহন দুর্ঘটনা, কখনো অন্ধকারে সেতুতে উঠতে গিয়ে পথচারীদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে বাকবিতণ্ডাও ঘটছে। এরমধ্যে অন্ধকার ঘিরে অপরাধীদের দৌরাত্ম্যও মারাত্মক ঝুঁকিতে।

কালুরঘাট সেতু দিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী ও পটিয়ার অধিকাংশ মানুষ আসা-যাওয়া করেন। সময় বাঁচাতে হেঁটে পার হন যাদের বেশিরভাগ।

পথচারীদের প্রশ্ন, ঘুটঘুটে অন্ধকার সড়কে একটি ফ্লাডলাইট লাগানোরও ‘মুরোদ’ নেই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের, না কি পথচারী ঘাঁড়ে নিতে চান না!

শনিবার সন্ধ্যায় কালুরঘাট সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর ওপরে ল্যাম্প পোস্টের ফকফকা আলো নজর কাড়ছে দূর থেকেই। তবে কাছে গিয়ে বুঝা গেল সেতুতে উঠতে হলে নিজ গরজেই কাটিয়ে আসতে হবে অন্ধকারের ঘনঘটা। বেশিরভাগ পথচারীও তাই করছেন। মোবাইলের আলোতে কোনোমতে সেতুতে উঠছেন। কম আলোতে কেউ কেউ হোঁচটও খাচ্ছেন।

হাসান কুতুব নামে এক চাকরিজীবী বলেন, সেতু চালু করে দেওয়ার আগে অন্তত রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়গুলো চিন্তা করা উচিত ছিল। কোথায় কোথায় সমস্যা রয়েছে। পথচারীদের কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা।’

অনেকে অনেক রাত করে বাড়ি ফিরেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেতু চালুর পর মনে হয় না কর্তৃপক্ষের কেউই এগুলো দেখভালের জন্য এসেছেন। সন্ধ্যার পরই যে সেতুর দু’পাশ অন্ধকার হয়ে যায়; এই অবস্থায় বখাটে ছেলেদের উৎপাতে বিশেষ করে মেয়েদের চলাফেরা করাটা অনিরাপদ।’

জিনাত জুয়েল নামে আরেকজন বলেন, ‘দুপাশে বাতি লাগানোর বিষয়ে এতদিনেও রেল কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। লাইট না থাকার কারণে যেকোনো সময় বড় কোনো দুর্ঘটনা হয়ে যেতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘রাতে চাকরি থেকে আসার সময় দেখা যায়, লাইট না থাকার কারণে সেখানে কিছু বখাটে ছেলে স্থান নেয়। অনেক সময় অন্ধকারে তাদের ভালোভাবে খেয়ালও করা যায় না। রাতে আসতেও ভয় লাগে। কখন কি না কি হয়ে যায়।’

এই সেতু দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করা রাজু হোসাইন নামে একজন বলেন, অন্ধকার ওয়াকওয়ের ওপরে বখাটের আড্ডা চলে। কোনো সমস্যা হয়ে গেলে এসবের দায় কে নেবে? দ্রুত দুপাশের এপ্রোচ সড়কে বাতি লাগানো হোক।’

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যরা সংস্কার কাজ পরিদর্শনকালে কিছু পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছিলেন। এর মধ্যে, রাতে সেতুতে যান চলাচল যেন বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য বিভিন্ন পয়েন্টে লাইট রিফ্লেকটিং রং ব্যবহার, পর্যাপ্ত বাতির ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

তবে সেতুর সংস্কারকাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে, সেতুর সংস্কারে নকশা অনুযায়ী সেতুর দু’পাশের অ্যাপ্রোচ সড়কে লাইট লাগানোর বিষয়টি ছিল না। সেজন্য সেখানে লাইট লাগানোর কোনো জায়গা (খুঁটি) রাখা হয়নি। কথা ছিল শুধু সেতুতে লাইট লাগানোর। আর সে সসব লাইটে কোনো ধরনের সমস্যা হলে তা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের।

জানতে চাইলে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. মেহেদী হাসান  বলেন, ‘বুয়েট কর্তৃক প্রণীত নকশায় সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়কে লাইটের ব্যবস্থা বা লাগানোর বিষয়টি ছিল না। আমাদের শুধু সেতুর ওপর লাইট লাগানোর কথা ছিল; সেগুলো লাগানো হয়েছে। আর সেতুর ওপরের লাইটগুলোতে কোনো সমস্যা হলে সেটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের।’

এ বিষয়ে জানতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্তের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

৯০ বছরের পুরোনো এ সেতুর সংস্কার কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ১ আগস্ট। প্রায় ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুর সংস্কারকাজ শেষ হয়েছে সম্প্রতি। গত ২৪ সেপ্টেম্বর কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন বুয়েটের তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল। তারা সংস্কার কাজের অগ্রগতি ও গুণগত মান পরীক্ষা শেষে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যান চলাচলের জন্য সেতু চালু করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

গত ২৭ অক্টোবর সকাল ১০টা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুর এপাড়-ওপাড় দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়। কালুরঘাট সেতুতে যান চলাচলে আপাতত কোনো টোল নিচ্ছে না রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সর্বোচ্চ ৮ ফুট উচ্চতার সব ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারছে। তবে চলাচল করছে না ট্রাক-বাসের মতো ভারী যান। – সিভয়েস২৪


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
bdit.com.bd